Thursday, September 28, 2023

কানাডা - খ্রীস্টান - কুসংস্কার - চার্চের চর্চা

যখন হিসারের একটা চার্চের দেওয়াল ভাঙ্গা সারা বিশ্বের ব্রেকিং নিউজ হয়, যখন কাঠুয়ার আসিফার কথা বিবিসি এক মাস ধরে সম্প্রচার করে, যখন একজন আখলাকের মৃত্যু UNO পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যখন গত মাসে ভারতের নদীতে ভাসা লাশ আন্তর্জাতিক খবরের চ্যানেল গুলোর কাছে ভারতের ব্যর্থতার আর হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়ায়, যখন ভারতের কৃষক আন্দোলনের বিষয়ে রিয়ানা, গ্রেটা বা মিয়াখালিফারা টুইট করে, তখন কানাডার একটা ক্যাথলিক স্কুলের উঠোনে তিন থেকে পনেরো বছরের বাচ্চাদের দু'শোর বেশি গণ-কবর পাওয়া গেলেও বিবিসি থেকে শুরু করে বিশ্বের সমস্ত মিডিয়া একটা আওয়াজও করে না । আর ঠিক সেই সময়েই যদি আজতক চ্যানেল খবর চালায় হোম-যজ্ঞ করা অন্ধবিশ্বাস তাহলে আমার আপনার জন্যে কারা খবর বানাচ্ছে সেটা বুঝতে সময় লাগে না । আমরা যদি এখনো এদের খবরের চ্যানেল বলি তাহলে ক্যাথলিক চার্চের দালাল কারা ?

হ্যা, কয়েকদিন আগে কানাডার ক্যাথলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান "ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল"-এর উঠোনে ২১৫ টা বাচ্চার গণ কবর পাওয়া গেছে যারা ১৮৪০ -১৯৯০  সালের মধ্যে কানাডায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরিবারের সদস্য ছিল | তাদের বলপূর্বক তাদের পরিবারের কাছ থেকে নিয়ে গিয়ে এই রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে রাখা হত | আর অকথ্য অত্যাচার করা হতো |

সারা বিশ্ব এই খবর নিয়ে একটা আওয়াজও করেনি | এমনকি ভাটিকানের মহান পোপও না | সেই পোপ ফ্রান্সিস  যে ২০১৫ সালের ২০শে জানুয়ারী মারিয়েটা থেকে ভাটিকান  যাওয়ার আগে সাংবাদিক দের বলেছিল চার্চ বাচ্চাদের সুরক্ষিত রাখতে আর দ্বায়িত্ববান ভবিষ্যত গড়তে সর্বদা কাজ করে চলেছে, কিন্তু পাদ্রী আর চার্চের আধিকারিকদের দ্বারা চার্চের বাচ্চা আর মহিলাদের যৌন হেনস্থার কোনো প্রতিকার না করতে পেরে আমরা লজ্জিত |

এমন নয় যে পোপের কষ্ট হয় না | এমন নয় যে পোপ কোনো বিষয় নিয়ে দুঃখিত বা চিন্তিত হন না | স্পেনে গিয়ে তিনি বলেন যীশুর ২০০০ বর্ষপূর্তির পর থেকে ২০ লক্ষ খ্রিস্টানদের চার্চ আর ক্রিস্চানিটি ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় উনি দুঃখিত | কিন্তু যখন আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় ৩০০ পাদ্রী ১০০০ বাচ্চার যৌন হেনস্থার মামলা সামনে আসে তখন এই পোপ দুঃখ প্রকাশ করেন না, যীশুর কাছে প্রার্থনা করার নাটক করেন | ওই পাদ্রীদের আইনানুগ শাস্তির কথা বলেন না উল্টে যীশুর কাছে ওই বাচ্চা দের "শান্তির প্রার্থনা" করে বলেন "ওই পাদ্রীরা বাচ্চাদের ওপর অত্যাচার করেছে, ওদের অন্ধকার ঘরে বন্ধ করে রেখেছে, বাচ্চাদের কথা কেউ শুনছে না, তুমি ওদের সাহায্য করো" |  

ভারতের একটা চার্চে চুরির ঘটনা ঘটলে পোপ দুঃখী হয়ে যায়, আমেরিকার রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা আমাদের প্রধানমন্ত্রী কে ফোন করে দেয় কিন্তু আয়ারল্যান্ড-এর ক্যাথলিক চার্চের থেকে যখন সামূহিক শিশু নিগ্রহের খবর আসে যাতে ম্যাগদালিন লন্ড্রির মত জঘন্য ঘটনা সামনে আসে, তখন পোপ, আমেরিকার রাষ্ট্রপতি বা অন্য কোন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রতিবাদ বা সমালোচনা চোখে পড়ে না | ম্যাগদালিন লন্ড্রিতে প্রায় ৩০০০ মহিলাকে বন্দী বানিয়ে রাখা হতো চার্চের নির্দেশে, এই লন্ড্রির উঠোনে প্রায় ১৫৫ মহিলার গণ-কবর পাওয়া যায় ২০১৩ তে | এছাড়াও বেআইনি ভাবে শিশুদের কেনা বেচা করার মামলাও সামনে আসে | এই সব কিছুই ক্ষতিপূরণের ডলারে শান্ত করিয়ে দেওয়া হয় | 

কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৪৫ শতাংশ চার্চের ওপর ওই একই মামলা সামনে আসে | অস্ট্রেলিয়ার সরকার রয়াল কমিশন বানিয়ে সেই সব মামলার তদন্ত করে | কিন্তু সত্যি সামনে আসে নি আর কোনো ফাদার, প্যাস্টর, পাদ্রীকে শাস্তি দেওয়া যায় নি | শাস্তির নামে তাদের এক চার্চ থেকে অন্য চার্চে ট্রান্সফার করা হয় মাত্র | ১৯৮০ থেকে ২০১৩ -র মধ্যে প্রায় ৫০০০ মহিলা আর শিশু নিগ্রহের মামলা সামনে আসে | স্পেনে গত পঞ্চাশ বছরে প্রায় তিন লাখ বাচ্চা বিক্রি করা হয় ডাক্তার, নার্স পাদ্রী, প্যাস্টর, নান দের একটা চক্রের দ্বারা | হাসপাতাল থেকে বাচ্ছা চুরি করে সেই বাচ্চা বিক্রি করে কয়েক লক্ষ ডলার কামিয়েছিল এই যীশু ভক্তরা, মামলা হয়েছে কিন্তু শাস্তি হয়নি | কিছুদিন আগে ভারতের তামিলনাডুর কাঞ্চিপুরম জেলার সাল্ভাক্কাম গ্রামে "দ লাইট অফ দ ব্লাইন্ড" নামক NGO-র আড়ালে এক পাদ্রী মানব অঙ্গ আর হাড়ের চোরাচালান করতে ধরা পরেছিল |

এসবে পোপের সামান্য দুঃখও হয় না | কারণ পোপ এই ফাদার, প্যাস্টর, পাদ্রীদের থেকে আলাদা কেউ নয় | হ্যা, এদের সর্দার বলা যেতে পারে | অস্ট্রেলিয়ার রয়াল কমিশনের উকিল গ্যাল ফার্নেস-এর লেখা পড়লে সেটাই মনে হয় | 

হিন্দুদের একপ্রকার সব কিছুকেই কুসংস্কার, নারীবিদ্বেষী প্রমান করতে ব্যস্ত এই খ্রিস্টানদের চার্চে একসময় হোয়াইট উইচ আর ব্ল্যাক উইচ এর চলন ছিল | হোয়াইট উইচ মানে যারা ফাদার, প্যাস্টর, পাদ্রীর ওজন নিজের ওপর নিতে রাজি আর ব্ল্যাক উইচ মানে যারা রাজি নয় | তাদের জিনের কাছে দিয়ে দেওয়া হতো জ্যান্ত জ্বালিয়ে মারার জন্যে | একটা ছবি দিয়েছি | এই ছবি নিয়ে বেশি পড়াশোনা করতে গিয়ে একটা সাইটে গিয়ে পৌঁছতে দেখলাম প্রবেশ শুধু মাত্র উইচ মেম্বারদের জন্যে | 

Black Witch Burning

আমাদের হোমযজ্ঞকে কুসংস্কার বলা এই ক্রিস্টান বুদ্ধিজীবীদের পীঠস্থান কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি জিনদের আধুনিক চিকিত্সায় কিভাবে ব্যবহার করা যায় তার জন্য আর্টিকল ছাপে | 


Looking at jinn possession in modern psychiatric practice

আজ ভারতে ঝোলা ছাপ খ্রিস্টানরা রাস্তার মোড়-এ দাঁড়িয়ে বাইবেল বিলি করছে, যীশু কত দয়াবান তার মহিমা প্রচার করছে | স্কুলের বাইরে বাচ্চাদের ক্রস আর যীশুর কমিক্স বিক্রি করা হচ্ছে, ম্যাজিক চিকিত্সা করার হাস্যকর ভিডিও দিয়ে কিছু আকাট মুর্খকে খ্রিস্টান বানানো হচ্ছে, রাখি সাবন্ত-এর মতো কিছু দুশ্চরিত্র লম্পট বলছে তার শরীরে যীশুর রক্ত বইছে তাই তার করোনা হবে না, এক বস্তা চালের পরিবর্তে প্রকাশ্যে ধর্মান্তকরণের ব্যবসা চলছে, বেকারদের রোজকার করার জন্য মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর স্টাইলে ধর্ম বদলানোর ব্যবসা চলছে আর আমরা চুপ করে দেখছি | কনভেন্ট-এ পড়তে বা বাড়ির বাচ্চাদের পরাতে পারলে এখনকার বাবা মা ধন্য হয়ে যায় | ২৫শে ডিসেম্বর মাথায় সং টুপি না পরলে আর কেক না খেলে জীবনটাই ব্যর্থ মনে করে দিনমজুর থেকে কোটিপতি সবাই | 

সারা বিশ্বে যখন খ্রিস্টানরা চার্চ, ফাদার, পাদ্রী, প্যাস্টরদের অত্যাচারের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিরোধ করছে, "আমাদের চার্চ থেকে আমাদের বাঁচাও" লেখা পোস্টার নিয়ে মিছিল করছে, তখন আমাদের দেশে ক্রিপ্তোক্রিশ্চানরা একবস্তা চাল বা পাঞ্জাবের মত রাজ্যে এক বস্তা গম দিয়ে গরীব মানুষগুলোর গলায় যীশু ঝুলিয়ে দিচ্ছে আর চৌবাচ্ছার জলে টিপে ধরে হালেলুইয়া করে দিচ্ছে | অতি সত্তর যদি এই মহামারীর বিহিত না করা হয় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের আশেপাশেও ঐরকম পোস্টার নিয়ে দাঁড়ানোর লোক কম পড়বে না | 

অনিন্দ্য নন্দী, রাজ্য সভাপতি, একম সনাতন ভারত দল, পশ্চিমবঙ্গ  

☆ধর্ম vs মজহব্ বা Religion এবং সনাতন হিন্দু ধর্মের চূড়ান্ত স্বাধীনতা☆

☆ধর্ম vs মজহব্ বা Religion এবং সনাতন হিন্দু ধর্মের চূড়ান্ত স্বাধীনতা☆  

রচনা :-
অরিন্দম রায়।

ভারতবর্ষের বেশিরভাগ মানুষই জানেন না যে "ধর্ম" শব্দটির কোনও ইংরেজী অনুবাদ নেই বা, হয় না।

ভারত বা বিদেশের লোকেরা ধর্মের অর্থ করতে গিয়ে ইংরাজীতে যা বোঝায়, তা হলো: - "Religion"(রিলিজিয়ন)।
এরা কোনোটাই কোনো ভাবেই এক নয়। যে কোনও রিলিজিয়ন এর অবশ্যই কোনও প্রতিষ্ঠাতা বা "নবী" থাকতে হবে।

তাই বৈদিক সনাতন হিন্দু ধর্ম ছাড়া আর বাকি সমস্ত গুলিই হলো "মজহব্" বা "সম্প্রদায়" বা "রিলিজিয়ন"। ইংরেজিতে ধর্ম শব্দের কোন ট্রানসলেশন খুঁজে পাবেন না। "রিলিজিয়ান" শব্দটির মানে হল "সম্প্রদায়"। যাকে হিন্দিতে বলা হয় "মজহব্"।

"সম্প্রদায়" বা "মজহব্" এর কেউ-না-কেউ স্রষ্টা আছে যা তাকে বানিয়েছে বা সৃষ্টি করেছে। যেমন ইসলামের ক্ষেত্রে হজরত মুহাম্মদ, খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রে যীশু খ্রীষ্ট, যুথীষ্টীয়ান দের ক্ষেত্রে আব্রাহাম, বৌদ্ধদের ক্ষেত্রে গৌতম বুদ্ধ, জৈন ধর্মের ক্ষেত্রে মহাবীর তীর্থঙ্কর, শিখদের ক্ষেত্রে গুরু নানক....
কিন্তু সনাতন হিন্দু ধর্মের কোনো স্রষ্টা পাবেন না। সনাতন কথার মানে হল যা "চিরকালীন" বা, "যা চিরন্তন" যাকে English এতে বলা হয় Eternal. অর্থাৎ এর কোন স্রষ্টা নেই। হিন্দু ধর্মের কোনো স্রষ্টা হয় না।
তাই বলতে গেলে বলতে হয়, যে সমগ্র পৃথিবীতে ধর্ম শুধুমাত্র একটিই,
আর তার নাম হল "সনাতন হিন্দু ধর্ম"। যা, 197 কোটি  বছর বা English  এতে বলতে গেলে বলতে হবে 197 Billion years Old. হিন্দু  দের সর্ব প্রাচীন ক্যালেন্ডার হলো ব্রক্ষ ক্যালেন্ডার এই, ব্রক্ষ সম্বৎ বা ব্রক্ষ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হিন্দু দের এখন 197 কোটি বছর চলছে।

আপনি কি জানেন...???

সনাতন ধর্ম যা,

ব্রক্ষ সম্বাদ" মানে "ব্রক্ষ ক্যালেন্ডার" অনুযায়ী,

197 বিলিয়ন বছরের পুরাতন।

আজ এটা প্রমাণিত হয়েছে অত্যন্ত কিছু দুরূহ গাণিতিক সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে।

একদম সঠিক তারিখ যদি বলি:-


এখন আমাদের সনাতনী জনগণের জন্য,   এখন "এক শো ছিয়ানব্বই কোটি, আট লক্ষ, তিপান্ন হাজার, এক শো তেইশ বছর" চলছে। 


বর্তমানে, ব্রহ্মার 50 বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। আমরা বর্তমানে 51 তম বছরের প্রথম 'দিনে' দাঁড়িয়ে আছি..


আর এটাও কি জানেন আপনি...??

বেদের উৎপত্তি কবে?

এর উত্তর হলো, প্রায় ১ বিলিয়ন বছর আগে। সঠিক করে বললে বলতে হয়, ৯৬ কোটি ৮ লক্ষ ৫৩ হাজার ১২৩ বছর আগে।

মানব সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে হিন্দু ধর্মের উৎপত্তি। যার জন্যে একে সনাতন অথাৎ "চিরন্তন" বা Eternal বলা হয়।  

এর স্রষ্টা, "বিশ্ব প্রকৃতি" নিজে।
কিন্তু "রিলিজিয়ান" বা, "সম্প্রদায়" যিনি বা যাঁরা বানিয়েছেন তাঁরা তাদের নিজস্ব বিশ্বাসকে বা মতামতকে অন্যের ওপর তুলে দিয়েছেন বা বলতে গেলে মগজ ধোলাই করেছেন, বা সেটা তাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ধর্ম যা, তা কখনো কোনো ব্যক্তি-মানুষের  মতামত বা বিশ্বাস এর উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকে না।
ধর্ম প্রকৃতির থেকে আপনা আপনি সৃষ্টি হয়েছে। এর পিছনে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি-মানুষের হাত নেই।
অন্য ভাবে বলতে গেলে বলতে হয় মানুষ যে দিন থেকে সভ্য হতে শুরু করেছে, সেদিন থেকে মানুষের মধ্যে যে শুভবুদ্ধির উন্মেষ হতে শুরু করে, তার থেকেই সৃষ্টি হয় ধর্মের। এই জন্যই ধর্মের কখনো কোনো স্রষ্টা হয় না বা হতেই পারে না।
আরো পরিষ্কার করে বলতে গেলে বলতে হয় এই যে "আগুনের" কোন রিলিজিয়ান হয় না। যা হয় তা হল ধর্ম। জলের কোন রিলিজিয়ান হয় না। যা হয় তা হল ধর্ম। বরফের কোন রিলিজিয়ান হয় না। যা হয় তা হল ধর্ম। অর্থাৎ আগুনের ধর্ম হল পোড়ানো। বরফের ধর্ম হল শীতলতা প্রদান করা, জলের ধর্ম হল বয়ে যাওয়া। ঠিক তেমনই সূর্য, চন্দ্রের কোনো রিলিজিয়ন হয় না। যা হয় তা হল ধর্ম। ঠিক একই ভাবে ইলেকট্রন, নিউটন, প্রোটন এর কোনো রিলিজিয়ন হয় না, যা হয় তা হলো ধর্ম। ইলেকট্রিক বা বিদ্যুতের কোনো রিলিজিয়ন হয় না, যা হয় তা হল ধর্ম। এই একই ভাবে একটি বাঘের, কুমিরের, পাখির কোনো রিলিজিয়ন হয় না, যা হয় তা ধর্ম।
আর এই সবই বা, সবাই বিশ্ব প্রকৃতির শিক্ষায় আপন আপন কর্মকে পালন করে চলেছে আর সেটাই তাদের ধর্ম।
ভারতবর্ষের সনাতন হিন্দু ধর্ম" ঠিক একই ভাবে মানুষকে "প্রকৃত মানুষ" হতে শেখায়।

তাই জানবেন, সমগ্র পৃথিবীতে ধর্ম হলো শুধুমাত্র একটিই, আর বাকি সমস্ত যা কিছু আছে তা হলো "সম্প্রদায়" বা, "মজহব্" বা "রিলিজিয়ন"।

হিন্দু ধর্ম বা, হিন্দুইজম এর প্রধান যে বক্তব্য বা দর্শন তা হল একজন মনুষ্য চেহারা ধারী একজন মানব নামক প্রাণীকে প্রকৃত মানুষ হতে শেখায়। বায়োলজির ভাষায় "হিউম্যান ইজ দ্য সোশ্যাল এনিমেল্" অথাৎ এই সোশ্যাল এনিমেল বা সামাজিক পশুর থেকে প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে শেখায় হিন্দু ধর্ম, বা হিন্দুজিম।
যার চূড়ান্ত বর্ণনা আমারা দেখতে পাই শ্রী অরবিন্দের লেখা "লাইফ ডিভাইন" গ্রন্থে বা বাংলায় অনুবাদিত "দিব্যজীবন" গ্রন্থে।

তাই, একমাত্র সমগ্র বিশ্বের মধ্যে একমাত্র সনাতন হিন্দু ধর্ম তার অনুগামী এই শিক্ষাই দেয় বলুন :- "অহম  ব্রক্ষাষ্মি"। আমিই ঈশ্বর, আমিই ব্রক্ষ। এযে একটি বৃহত্তর মোমবাতি বা ক্যান্ডেল থেকে কোটি কোটি  মোমবাতি জ্বলে ওঠা। তাই সনাতন হিন্দু ধর্ম মানুষ নামক সামাজিক প্রাণীটিকে  প্রকৃত মানুষ হতে শেখায়। যার ফলে সে তার শুভ কর্ম ফলের কারনে দেহ ত্যাগের পর তার নিজস্ব জীবাত্মা পারে সেই বিশ্বআত্মা বা বৃহত্তর মোমবাতি অসীম অনন্ত রশ্মির মধ্যে চির বিলীন হয়ে যেতে। এই কারনে সনাতন ধর্ম কর্মবাদকে বিশেষ ভাবে মান্যতা দেয়।

আমাদের শুভ কর্মই আমাদের ধীরে ধীরে জীবাত্মা স্তর থেকে বিশ্বআত্মার সঙ্গে চির বিলীন হয়ে যাবার পথে উন্নীত করে তোলে। তখন জীবাত্মা মধ্যে দিব্যজীবনের পথ চলা শুরু হয়ে যায়। এই শুভ কর্মের মাধ্যমে দিব্যজীবনের সিঁড়ি বেয়ে তার আপন জীবাত্মাকে উঠিয়ে নিয়ে যায় "অহম ব্রহ্মাস্মী" বলার লক্ষে। 

আমাদের এই একমাত্র সনাতন হিন্দু ধর্মের মধ্যেই পরিলিক্ষত হয় চরমতম স্বাধীনতা। যা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, অসাধারণ, অকল্পনীয় স্বাধীনতা। আর সেই পূর্ণ স্বাধীনতাকে নিয়েই সমগ্র পৃথিবীর বিভিন্ন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর জনগোষ্ঠী বা মানুষেরা, সনাতন বৈদিক হিন্দু ধর্মকে হৃদয়ের থেকে পালন করে চলেছেন.....।


এক কথায় "ধর্ম" হলো আপনার অভ্যন্তরীণ "আমি"কে শুদ্ধ করার একটি প্রযুক্তি বা টেকনিক। এটি সমগ্র মানবজাতিকে শিক্ষা দেয় "কীভাবে একজন বিশুদ্ধ, খাঁটি মানুষ হয়ে উঠবেন" এর অর্থ সংস্কৃত ভাষায় বলা হয়, "মনুর ভব" যার অর্থ "একজন বিশুদ্ধ মানুষ হন"।

সুতরাং ধর্মের Translation করতে গেলে লিখতে হবে "DHARMA" কিন্তু তা বলে ☆Religion কোনো ভাবেই নয়.....।☆

সনাতন বৈদিক হিন্দু ধর্মের সম্পর্কে কিছু তথ্য দিয়ে আমি এখানে প্রমান করবো, সনাতন বৈদিক হিন্দু ধর্ম কি ভীষণ ভাবে উদার এবং সাধারণ কোনো মজহব্ বা Religion এর থেকে সম্পূর্ণ ভাবেই স্বাতন্ত্র্য এবং পৃথক।

1) ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস করেন, - অথাৎ আপনি "আস্তিক" :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

2) ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেন না..? - কোনো অসুবিধা নেই অথাৎ আপনি একজন "নাস্তিক"। তবুও আপনি এক জন হিন্দু :- আপনাকে আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

3) আপনি প্রতিমা পূজা করতে চান ? - এগিয়ে আসুন। অথাৎ, আপনি একজন "মুর্তি পুজক" :- আপনিও আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

4) আপনি প্রতিমা পূজা করতে চান না ?- কোন সমস্যা নেই। আপনি "নির্গুণ ব্রহ্ম" এতে মনোনিবেশ করতে পারেন: - আকারহীন, নিরাকার, অসীম, অনন্ত "ব্রহ্ম", যার না শুরু আছে, না শেষ আছে। সনাতন ধর্ম এর ভাষায় ব্যাখ্যা হলো :- "নির্বিকল্প ব্রহ্ম" :- অতএব আপনাকেও আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

5) আপনি আমাদের ধর্মের বিষয়ে সমালোচনা করতে চান ? এগিয়ে আসুন, আমাদের কাছে যুক্তিযুক্ত নানাবিধ দর্শন আছে, যেমন "সাংখ্যা", "ন্যায়", "তর্ক, "মীমাংশা", "চার্বাক", ইত্যাদি :- এর পরেও আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

6) আপনি বিশ্বাস হিসাবে শুধু মাত্র নিজের ওপরেই আস্থা রাখতে চান, আর অন্য কোনো কিছুকেই মানে না বা বিশ্বাস করেন না...? কোনো অসুবিধা নেই। তবুও আপনি হিন্দু :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

7) আপনি "ভগবদ গীতা" পড়ে আপনার যাত্রা শুরু করতে চান ? অবশ্যই করুন :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

8) আপনি "বেদ এবং  উপনিষদ" পড়ে আপনার যাত্রা শুরু করতে চান - এগিয়ে আসুন :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

9) আপনি "পুরাণ" পড়ে আপনার যাত্রা শুরু করতে চান, ঠিক আছে :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

10) আপনি কেবল "বেদ", "বেদান্ত" (অথাৎ "উপনিষদ") "পুরাণ" বা অন্যান্য বই পড়া পছন্দ করেন না...?
কোন সমস্যা নেই বন্ধু, "ভক্তি" মার্গের পথিক হয়ে পথ চলা শুরু করুন :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

11) আপনি "ভক্তি"র ধারণা পছন্দ করেন না ...?  কোনো
সমস্যা নেই....।
আপনার কেবল নিজের "কর্ম" এবং কর্তব্য পালন করুন।
(মানে, ওয়ার্ক অ্যান্ড ডিউটি)।
একজন "কর্মযোগী" হয়ে যান :-  তাতেও আপনাকে আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

12) আপনি জীবনকে চরম ভাবে উপভোগ করতে চান...? খুব ভালো কথা।
মোটেই কোন সমস্যা নেই.....
এটি আমাদের ভাষায় "চার্বাক দর্শন" :- অতএব আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

13) আপনি জীবনের সমস্ত উপভোগ থেকে বিরত থেকে কেবল ঈশ্বরের সন্ধান করতে চান ? - চলে আসুন ..! একজন "সন্ন্যাসী" হয়ে জীবন কাটান। যার অর্থ একজন
"তপর্স্বীক" :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

14) আপনি ঈশ্বরের ধারণা  মোটেই পছন্দ করেন না। আপনি কেবল প্রকৃতিতে বিশ্বাস করেন। মোস্ট ওয়েলকাম।
(গাছগুলি আমাদের বন্ধু, নদী আমাদের মাতা, পাথর আমাদের কাছে ভগবান, অথাৎ সমগ্র "প্রকৃতি" কেই আমরা উপাসনার করি) :- আপনিও আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

15) আপনি এক ঈশ্বর বা সর্বোচ্চ শক্তিতে বিশ্বাস করেন। দুর্দান্ত ....!
আমাদের "আদিত্য" দর্শনকে অনুসরণ করুন :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

16) আপনি "গুরু" বা গাইড/ পরামর্শদাতা চান না। চলে আসুন। কেবল জ্ঞান (জ্ঞান) অর্জন করুন। এটিকে আমরা "জ্ঞান যোগ" নামে অভিহিত করি :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

17) আপনার জ্ঞান চর্চা ভালো লাগে না...?
নিজেকে নিজেই সাহায্য করুন ...!
মেডিটেশন বা যোগ করা শুরু করুন...!
(এটি আমাদের জ্ঞান যোগের অধীন) :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

18) আপনি শুধুমাত্র নারী  অথাৎ মাতৃ শক্তিকে বিশ্বাস করেন ...! দুর্দান্ত,
এটিকে আমরা "আদ্যা-শক্তি" বলি (অর্থ মাতৃকা শক্তি) তাঁর উপাসনা করুন :- আপনিও আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

19) আপনি বিশ্বাস করেন যে প্রতিটি মানুষ সমান। হ্যাঁ,
আপনি দুর্দান্ত একটি কথা বল্লেন, আসুন, আজই শুরু করুন .... 
আমরা "বসুধাব্ই কুটুম্বাকাম" এই দুটি সংস্কৃত শব্দে বিশ্বাসী (যার অর্থ হলো সমগ্র বিশ্বই হলো একটি পরিবার) :- অতএব আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

20) আপনার উৎসব উদযাপন করার সময় নেই।
চিন্তা করবেন না। আরও একটি উৎসব আসছে ...!
বছরের প্রতিটি দিনেই সারা ভারতবর্ষ জুড়ে প্রতিদিনই কোনো নানা কোনো উৎসব থাকে :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

21) আপনি একজন শ্রমজীবী ​​ব্যক্তি। ধর্মের জন্য কোনো সময় নেই। ঠিক আছে, তবুও আপনি একজন "হিন্দু" হয়েই থাকবেন :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

22) আপনি মন্দিরে যেতে পছন্দ করেন। ঠিক আছে কোনো সমস্যা নেই, এগিয়ে আসুন......
এর জন্যেই ভক্তি এবং প্রেমের মার্গ আছে :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

23) আপনি জানেন যে আমাদের হিন্দু ধর্ম "সনাতন" অথাৎ চিরন্তন। "বৈদিক"এই শব্দটি এসেছে : - "বেদ" যা মূলত চারটি পবিত্র পুস্তক বিভিন্ন অজানা ৠষির দ্বারা রচিত হয়েছে আগেই বলেছি, যা কমপক্ষে প্রায় ১ বিলিয়ন বছর আগে। সঠিক করে বললে বলতে হয়, ৯৬ কোটি ৮ লক্ষ ৫৩ হাজার ১২৩ বছর আগে। 
"বৈদিক" অর্থ জীবনের একটি উপায়, এবং অবশ্যই তা চূড়ান্ত এবং চরম স্বাধীনতা সহ।

আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

25) আপনি বিশ্বাস করেন যে সবকিছুতেই ঈশ্বর রয়েছেন।
সুতরাং আপনি আপনার মাতা, পিতা, গুরু, বৃক্ষ, নদী, পৃথিবী, অথাৎ  মহাবিশ্বের উপাসনা করেন, যে কোনও ধরণের উপাদানকেই সামনে রেখে ....!

আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

26) এবং যদি আপনি বিশ্বাস না করেন, যে সব কিছুতেই ঈশ্বর  রয়েছে :- কোনও সমস্যা নেই। আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকেও আমরা সম্মান করি। তবুও আপনি "হিন্দু।"  তাই :- আপনি আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মে স্বাগত।

27) "সর্ব জন সুখিনো ভাবন্তু" (পৃথিবীর সমস্ত ব্যক্তি সকলেই সুখে বাঁচুক)

আমরা হিন্দুরা এরই প্রতিনিধিত্ব করছি ....! আপনি নিজের উপায়, নিজের পথ কে বেছে নিতে সর্বদা স্বাধীন সম্পূর্ণ এবং মুক্ত......!!!

এটিই হলো হিন্দু ধর্ম বা সনাতন বৈদিক ধর্ম। এটাই এর সবথেকে বড়ো সৌন্দর্য........!!!
🙏🙏🙏
🕉🕉🕉
🚩🚩🚩

Monday, September 25, 2023

কখনো ভুলেও শুভ মহালয়া লিখবেন না।

☆মহালয়া ☆

রচনা :- অরিন্দম রায়।
রাজ্য মিডিয়া,
একম্ সনাতন্ ভারত্ দল্,
পশ্চিমবঙ্গ।

এই বছর মহালয়া পড়েছে 14ই অক্টোবর 2023.

মা দুর্গার মুখের ছবি দিয়ে 'শুভ মহালয়া' লিখে কত মেসেজ আসবে এক ফোন থেকে আরেক ফোনে। 
আমরা অনেকেই জানি না, মহালয়ের সাথে দুর্গাপূজার কোন সম্পর্কই নেই। 
হয়তো অনেকে বলবেন মহালয়া মানেই তো দেবীর আগমন। অর্থাৎ দূর্গা পুজা শুরু।

মহালয়ার সঙ্গে দুর্গাপূজোর আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই। যারা মা দুর্গা'র ছবির সঙ্গে 'মহালয়া' লিখছেন অথবা শুভ মহালয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, তাঁরা নিজেরাও জানেন না সনাতন্  হিন্দু শাস্ত্র মতে কত বড় ভুল কাজ তাঁরা করছেন....।

পিতৃপক্ষের শেষক্ষণ ও মাতৃপক্ষের সূচনাকালের সময়কেই মহালয়া বলা হয়। মহান কিংবা মহত্বের আলয় (আশ্রয়) থেকেই এই শব্দের উৎপত্তি। 
সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, এই দিনে প্রয়াত বিদেহী আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, প্রয়াত বিদেহী আত্মাদের যে মহা সমাবেশ হয় তাকেই মহালয়া বলা হয়ে থাকে।

অনেকে বলেন রেডিওতে মহালয়া শুনেছিলেন..? 
ওটা কিন্তু মোটেই মহালয়া নয়। 
ওটা "মহিষাসুরমর্দিনী" নামের একটি অনুষ্ঠান মাত্র। এর সঙ্গেও মহালয়া'র কোনো সম্পর্কই নেই। এই দিনে অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার হয়, এই পর্যন্তই।

●মহাভারতেও এই ক্ষণের উল্লেখ পাওয়া যায়।● ☆মহাভারত হতে জানতে পারি, মৃত্যুর পর কর্ণের আত্মা পরলোকে গমন করলে তাঁকে খাদ্য হিসেবে স্বর্ণ ও রত্ন দেওয়া হয়েছিলো। কর্ণ এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাঁকে বলা হয়, তিনি সারা জীবন স্বর্ণ ও রত্ন দান করেছেন, কিন্তু প্রয়াত পিতৃগণের উদ্দেশ্যে কখনও খাদ্য বা পানীয় দান করেননি। তাই স্বর্গে খাদ্য হিসেবে তাঁকে সোনাই দেওয়া হয়েছে। বিমর্ষ কর্ণ বলেন, তাঁর পিতৃপুরুষ কারা সেটা তো তিনি মৃত্যুর মাত্র একদিন আগেই জানতে পেরেছেন। তার দোষ কোথায়...!!! 
যমরাজ তখন বোঝেন, সত্যিই তো, এতে কর্ণের কোনো দোষ নেই। এই কারণে কর্ণকে পক্ষকালের জন্য(ষোলো দিনের জন্য) আবারও মর্ত্যে ফিরে এসে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করার অনুমতি দেওয়া হয়.....!!!!☆ 
এই পক্ষ কালই "পিতৃপক্ষ" নামে পরিচিত হয়। আর সেই থেকেই হিন্দুদের মধ্যে "তর্পণের" প্রথা চালু হয়........।। 

তিথিটি শুভ কিংবা অশুভ তা বিচারের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে তর্পণ শব্দটির ব্যুৎপত্তি হয়েছে "তৃপ" ধাতুর থেকে। তৃপ + অনট, অর্থাৎ "তৃপ্তিসাধন", অথাৎ বিদেহী আত্মার তৃপ্তিসাধন করা। 

মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে উত্তরায়ণের সময়কালে মৃত্যু বরণ করতে অর্জুনের হাতে শরশয্যায় শায়িত ভীষ্ম এই তিথিটির অপেক্ষা করতে থাকেন। 
তাই এই তিথির গুরুত্ব, শুধু সনাতন ধর্ম মতে তা নয়, পুরাণ ও শাস্ত্র মতেও এর গুরুত্ব অপরিসীম।

●পারলৌকিক ক্রিয়াকর্মের তিথি হিসেবে নির্দিষ্ট হওয়ায় একে 'শুভ' বলতে নেই।●
পিতৃপক্ষ পূর্বপূরুষের তর্পণাদির জন্য প্রশস্ত এক বিশেষ পক্ষ। এই পক্ষ "পিতৃপক্ষ", "ষোলা শ্রাদ্ধ", কা"নাগাত", "জিতিয়া", "মহালয়া পক্ষ" ও "অপরপক্ষ" নামেও পরিচিত। সনাতনী ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, যেহেতু পিতৃপক্ষে প্রেতকর্ম (শ্রাদ্ধ), তর্পণ ইত্যাদি মৃত্যু-সংক্রান্ত আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়, সেই হেতু এই পক্ষ ●শুভকার্যের জন্য প্রশস্ত নয়●।
সেহেতু ●Xশুভ মহালয়াX● বলা একেবারেই সঠিক নয়। আপনারা, যাঁরা এই লেখাটি পড়লেন, আশা করব যে, তাঁরা অন্ততঃ "শুভ মহালয়া" আর কখনো বলবেন না, বা অন্যান্যদেরও সংশোধন করে দেবেন।।

সনাতন ধর্মে কোন শুভ কাজ করতে গেলে, এমনকি বিবাহ করতে গেলেও প্রয়াত পূর্ব পুরুষদের সাথে সমগ্র জীব-জগতের জন্য তর্পণ করতে হয়, কার্যাদি-অঞ্জলি প্রদান করতে হয় । তর্পণ মানে তৃপ্তিকরণ করা । রামায়ণ অনুযায়ী লঙ্কাবিজয় ও সীতা উদ্ধারের জন্য অকালবোধনের আগে এই অমাবস্যা তিথিতেই পিতৃপুরুষ ও মাতৃপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করেছিলেন 
শ্রী রামচন্দ্র।

"পিতৃপক্ষ"
সেই অনুসারে এই "মহালয়" তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন তারা তাদের পূর্বপূরূষের স্মরণ করেন, পূর্বপূরুষের আত্নার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন। আগেই উল্লেখ করেছি সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত বিদেহী আত্নাদের মর্ত্যে প্রেরণ করা হয়, প্রয়াত বিদেহী আত্নার যে মহা সমাবেশ ঘটে, তাকে বলা হয় মহান আলয়। সেই শব্দ থেকেই এসেছে ‘মহালয়’ শব্দটি। "মহালয়" থেকে এসেছে "মহালয়া" । ☆পিতৃপক্ষের শেষদিন 
এটি।☆

"মহালয়" পক্ষের পনেরোটি তিথির নাম হল প্রতিপদ, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী, একাদশী, দ্বাদশী, ত্রয়োদশী, চতুর্দশী ও অমাবস্যা। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, যে ব্যক্তি তর্পণে ইচ্ছুক হন, তাঁকে তাঁর পিতার মৃত্যুর তিথিতে তর্পণ করতে হয়।

পিতৃপক্ষে পুত্র কর্তৃক শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হিন্দুধর্মে অবশ্য করণীয় একটি অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের ফলেই মৃতের আত্মা স্বর্গে প্রবেশাধিকার পান। এই প্রসঙ্গে "গরুড় পুরাণ" গ্রন্থে বলা হয়েছে, "পুত্র বিনা মুক্তি নাই।" 
সনাতন ধর্মগ্রন্থে গৃহস্থদের দেব, ভূত ও অতিথিদের সঙ্গে পিতৃতর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। "মার্কণ্ডেয় পুরাণ" গ্রন্থে বলা হয়েছে, পিতৃগণ শ্রাদ্ধে তুষ্ট হলে :- ☆স্বাস্থ্য, ধন, জ্ঞান ও দীর্ঘায়ু এবং পরিশেষে উত্তরপুরুষকে স্বর্গ ও মোক্ষ প্রদান করেন।☆

☆অসতো মা সদগময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়ঃ
ওঁম মৃত্যর্মা অমৃতমঃ গময়ঃ শান্তি, শান্তি ওঁম শান্তি, ওঁম শান্তি ওঁম, হরি ওঁম তদসদ্।☆

অথাৎ :-

হে ঈশ্বর, আমাকে নিয়ে চলুন অসত্য থেকে সত্যে, অন্ধকার থেকে আলোকে, মৃত্যু থেকে অমৃতে । এই অনিত্য মৃত্যুময় জগৎ থেকে আমাকে শাশ্বত আনন্দের জগতে নিয়ে চলুন। আপনার করুণার দীপ্তিতে আমার অন্তরাত্মা সত্যের আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক।
শান্তি শান্তি, ওঁম শান্তি, ওঁম শান্তি ওঁম....
🙏🏻🚩🙏🏻🚩🙏🏻
🕉🍁🕉🍁🕉

"রাধা" চরিত্রের উপস্থাপনা সম্পূর্ণ এক রাজনৈতিক চক্রান্ত।

 
রচনা :- অরিন্দম রায়
যদি প্রকৃত হিন্দুত্ববাদী হন, 
সনির্বন্ধ অনুরোধ, 
এখন থেকে এই ছবির দুর্ধর্ষ বীর এবং বিশাল রাজনীতিবিদ যুগপুরুষ "এই শ্রীকৃষ্ণের" পূজা করুন.............
এবং অনান্যদের করতেও উৎসাহিত করুন..........। 
যা তিনি নন, যা তিনি কোনোদিনই ছিলেন না, তার সেই ছবিকে পূজা করার মানে একজন প্রকৃত হিন্দু হয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে অপমান করা..............।
Please, এত বড় একজন মহামানব কে রাধার ছবির পাশে দাঁড় করিয়ে, হাতে বাঁশি ধরিয়ে দিয়ে, পায়ে নূপুর পরিয়ে দিয়ে একজন "ব্যভিচারি পুরুষ" রূপে আর পূজা করবেন না..............। 
সকলকে বোঝান এবং এটিকে এক জন-আন্দোলনের রূপ দিন........।
☆রাধার নামটি আসিল কোথা হইতে.....???☆

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর "কৃষ্ণচরিত্র" গ্রন্থে প্রশ্ন করেছেন- এই রাধা আসিলেন কোথা হইতে, আর "আমি" আজকে প্রশ্ন করছি- রাধার নামটি আসিল কোথা হইতে ?

শ্রীকৃষ্ণের যে প্রামাণ্য জীবনী- "হরিবংশ" এবং "মহাভারত", সেখানে রাধার নামের কোনো অস্তিত্ব নেই। এ প্রসঙ্গে বলে রাখি হরিবংশ এবং মহাভারত একে অপরের পরিপূরক গ্রন্থ, শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে যে তথ্য হরিবংশে আছে, সেটা মহাভারতে নেই, আবার মহাভারতে যে তথ্য আছে, সেটা হরিবংশে নেই। হরিবংশে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম থেকে বাল্য অবস্থার সবকিছু আছে, আর মহাভারতে আছে তার বাল্য ও কৈশোরের পরবর্তী ঘটনাগুলো। প্রশ্নটি আমার নয় সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর।

তিনি তাঁর সুদীর্ঘ 15 বছরের Research এর পর যে জগদ্বিখ্যাত গ্রন্থটি রচনা করেছিলেন যার নাম হলো, "কৃষ্ণচরিত্র"। প্রথম প্রকাশনা ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে।

এই গ্রন্থটিতে ঠিক এই প্রশ্নটিই তিনি করেছিলেন।
গ্রন্থটি online এ বাংলাতে Available আছে। পড়ে দেখুন। Link :-
https://advocatetanmoy.com/2020/04/25/krishna-charitra-by-bankim-chandra
আমাদের পরম পুরুষ শ্রীকৃষ্ণের জীবন কে রাধা নামক এক ঐতিহাসিক অস্তিত্ব বিহীন নারীর সঙ্গে এবং 16 হাজার 108 জন গোপিনীদের সঙ্গে জড়িয়ে দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের চরিত্র কে Polygamous বা ব্যভিচারি বানানোর যে, ই#স#লা#মি#ক শাসকদের যে কতো বড় চক্রান্ত ছিলো, তা জানলে আজকের প্রজন্মের যুবাদের রীতিমতো চমকে উঠতে হবে.......!!

রাধা-কৃষ্ণের প্রেম, সত্য না কল্পকাহিনী.....???
মূল মহাভারত, চার বেদ, ১০৮টি উপনিষদ, গীতার ১৮টি অধ্যায়ের ৭০০ শ্লোক এবং বিষ্ণু পুরান- কোথাও
রাধার কোনো উল্লেখ নেই.........। 
এই সমস্ত বিষয়,
বিচার-বিশ্লেষণ করে, সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার ‍“কৃষ্ণ চরিত্র” গ্রন্থে এক বিশাল প্রশ্ন উত্থাপন
করে বলেছেন,
‍“তাহা হইলে, এই রাধা আসিলেন কোথা হইতে.....???”

রাধার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মহাপুরুষ শ্রীকৃষ্ণের
চরিত্রে যথেষ্ট কালিমা লেপন করা হয়। শ্রীকৃষ্ণের চরিত্র কে ই#স#লা#মি#ক শাসকরা সুপরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্র করে একটি "পলিগেমাস" বা ব্যভিচারি চরিত্রে রূপান্তরিত করে।

যাতে করে তাদের ই#স#লা#ম# মজহব্ এর দ্বারা সমর্থিত মু#স#ল#মা#ন পুরুষের বহু বিবাহ প্রথা এবং পুরুষ এর "পলিগ্যামাস" বা ব্যভিচারি চরিত্র কে তাদের মজহব্ এর আসমানি গ্রন্থের মাধ্যমে যে ভয়ংকর ভাবে সমর্থন করা হয়েছে, সেই বিষয়টি কে ভারতীয় হিন্দু জনমানসেও শ্রী কৃষ্ণ নামক মহাপুরুষের চরিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে দিয়ে মু#স#ল#মা#ন#দে#র  ব্যভিচারি জীবন যাত্রাকে এবং তাদের ই#স#লা#ম নামক মজহব্ এর গ্রহণযোগ্যতার প্রেক্ষাপট্ কে তৈরী করা।

এর জন্যে তৎকালীন মু#স#ল#মা#ন শাসকরা কিছু অর্থ লোলুপ হিন্দু পন্ডিতদের মাধ্যমে এবং কিছুটা ভয় দেখিয়ে পুরানের মধ্যে এমন কিছু কাহিনী কে শ্রীকৃষ্ণের সমন্ধে ঢুকিয়ে দিয়েছে যা পরবর্তী প্রজন্ম একেই সত্য বলে মেনে নিয়েছে। 

একটি কথা সর্বদা মনে রাখবেন, "চন্দ্র বংশীয় রাজা শ্রী রাম" এবং "যাদব বংশোদ্ভূত দ্বারকা রাজ শ্রীকৃষ্ণ" দুজনেই ছিলেন ঐতিহাসিক মহাপুরুষ।

শ্রীকৃষ্ণের জন্ম :- জন্ম তারিখ: 18ই জুলাই, 3,228 খ্রিস্টপূর্বাব্দ
মাস :- শ্রাবণ মাস, 
দিন :- অষ্টমী তিথি,
নক্ষত্র :- রোহিণী নক্ষত্রে জন্ম,
দিন :- বুধবার,
সময় :- 00:00 A.M.(রাত বারোটা)
শ্রী কৃষ্ণ 125 বছর, 08(৮) মাস এবং 07 দিন বেঁচে ছিলেন।

মহাপ্রয়ান এর তারিখ :- 
18ই ফেব্রুয়ারি 3102 খ্রিস্টপূর্বাব্দ।

মহাভারতের যুদ্ধ :-

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শুরু হয়েছিল 8(৮)ই ডিসেম্বর 3139 খ্রিস্টপূর্বাব্দ এবং শেষ হয় 25শে ডিসেম্বর, 3,139 খ্রিস্টপূর্বাব্দ।

এর পাশাপাশি আমাদের চতুর্থ প্রকার বেদ, উপনিষদ বা বেদান্ত এবং গীতা হলো ঐতিহাসিক প্রামাণ্য গ্রন্থ। কিন্তু সেখানে "পুরান" হলো সম্পূর্ণ মন গড়ন "কল্পকাহিনী"।

কোনো নারী যদি কোনো ব্যক্তির জীবনে থেকে থাকে, আর সেই ব্যক্তিকে নিয়ে যদি একাধিক গ্রন্থ রচিত হয়ে থাকে, তাহলে বিভিন্ন গ্রন্থে সেই নারীর কাহিনী থাকবে, এক কথায় ঐ নারীকে নিয়ে ঐ ব্যক্তির জীবনে অনেক বাস্তব ঘটনা থাকবে, যেটা প্রমাণ করবে যে ঐ ব্যক্তির জীবনে ঐ নারীর অস্তিত্ব ছিলো। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের জীবনে রাধাকে নিয়ে এমন কোনো ঘটনা বাস্তবিক আকারে নেই, যেটা প্রমাণ করে যে শ্রীকৃষ্ণের জীবনে রাধা নামক কোনো নারীর অস্তিত্ব ছিলো, যার সাথে  শ্রীকৃষ্ণের প্রেম ভালোবাসা বা যৌনতার সম্পর্ক ছিলো।

শ্রীকৃষ্ণের মা ছিল দুইজন। জন্মদাত্রী দেবকী, আর পালক মাতা যশোদা। দেবকীর ভাই কংস, যাকে শ্রীকৃষ্ণের নিজে হত্যা করেন। কংসের যেহেতু অন্য কোন ভাই ছিল না, সেহেতু এই দিক থেকে শ্রীকৃষ্ণের অন্য কোন মামা থাকাও সম্ভব নয়। বাকি রইলো রাধার কথিত স্বামী আয়ান ঘোষ যে নাকি যশোদার ভাই। সেই ব্যাপারে, শ্রীমদ্ভাগবত, যেটা শ্রীকৃষ্ণের প্রামান্য জীবনী এবং মহাভারত, যাতে কৃষ্ণের জীবনের সমস্ত কাহিনীই লিপিবদ্ধ আছে, এই দুটো গ্রন্থে কোন তথ্য আছে কি....???

না, নেই.......।।

তাহলে আপনারা কিভাবে বলছেন যে- রাধা, শ্রীকৃষ্ণের মামী....? 

শ্রীকৃষ্ণের জন্মদাত্রী মাতা দেবকীর একটিই বড় ভাই ছিলো তার নাম কংস। কিন্তু আর কোনো ভাই আয়ান ঘোষের নাম প্রামাণ্য কোনো  গ্রন্থে পাওয়াই যায় না। 

তাহলে মামাই যখন নেই, তাহলে রাধা নামক মামী এলো কোথার থেকে....??? 

আশা করি বোঝাতে পারলাম।

আর একটি কথা, রাধার স্বামী হিসেবে যাকে বলা হয়, সেই আয়ান ঘোষ যে একটা কাল্পনিক চরিত্র, তার অন্যতম প্রমান হলো তার "ঘোষ" পদবী; এই ঘোষ পদবী মধ্যযুগের উৎপত্তি, যখন ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে এই আজগুবি কাহিনীগুলি লেখা হয়। কৃষ্ণের সময় ঘোষ পদবী বলে কিছু ছিল না। কারণ, কৃষ্ণের যুগে কোন পুরুষের নামের সাথে ঘোষ পদবী যোগ হতো না, যদিও বৃন্দাবনের সবার পেশাই ছিল বর্তমানের ঘোষ'দের মতোই।

হিন্দু ধর্মকে সাংস্কৃতিকভাবে ধ্বংস করার জন্য ভারতে মু#স#ল#মা#ন শাসন শুরু হওয়ার পর, বহু পুরাণ রচয়িতা "বেদব্যাসের" নাম ব্যবহার করে তাদের রচনা করা "ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ"(12 শতাব্দীতে লেখা) এবং তাতে প্রথম রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের আবির্ভাব ঘটানো হয়। মু#স#ল#মা#ন# শাসকদের এই কৌশল এবং চক্রান্ত বুঝতে না পেরে, ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণের কাহিনী অবলম্বন করে পরবর্তী কালে কবি জয়দেব সংস্কৃতে রচনা করেন "গীত গোবিন্দ" এবং বড়ু চণ্ডীদাস বাংলায় রচনা করেন "শ্রীকৃষ্ণীর্তন কাব্য" এবং তারপর চৈতন্যদেব এর আগে এবং পরেও লেখা হয়, "বৈষ্ণব পদাবলী"। এই কাব্য গ্রন্থ গুলির কারণে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম হিন্দুদের মাথায় শিকড় গেঁড়ে বসে যায়।

শ্রীকৃষ্ণের বহুবিবাহ সম্পর্কে প্রচলিত গল্প এই যে, শ্রীকৃষ্ণের মহিষী বা স্ত্রী ছিলেন ৮ জন এবং আসামের রাজা নরকাসুরের অন্তঃপুর থেকে উদ্ধার করা স্ত্রীর সংখ্যা ছিলো ১৬,১০০ জন; সব মিলিয়ে শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রীর সংখ্যা ১৬,১০৮।

এই কথাটা শুনেলেই তো প্রথমত যে কোনো হিন্দুর মাথা হেঁট হয়ে যায়। হিন্দু ধর্মের প্রধান পুরুষ শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে তাদের আর কোনো গর্ব করার জায়গা থাকে না। আর এই তথ্যকে সামনে এনে মু#স#ল#মা#ন#রা#ও যুক্তি দেখায় যে, শ্রীকৃষ্ণ যদি ১৬,১০৮ টি বিয়ে করতে , তাহলে আমরা চার খানা বিয়ে করতে পারবো না কেনো ? আর প্রকৃত তথ্য না জেনে, এইসব প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বা শ্রীকৃষ্ণের বহু বিবাহের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে গিয়ে আমরা হিন্দুরাও নানা রকম ন্যায় ও যুক্তি সঙ্গত গল্পের অবতারণা করার চেষ্টা করে থাকি, বাস্তবে যার কোনো প্রয়োজনই নেই; কারণ, ☆শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রী ছিলো মাত্র এক জন, তিনি রুক্মিনী।☆ অপর ১৬,১০৭ জন সম্পর্কে যে গল্প, তা যে ডাহা মিথ্যা, তা এই পোস্ট পড়ার পর নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন..........।

এই ভাগবতেই আছে, রাসের নামে কৃষ্ণের যৌনলীলার কাহিনী, কিন্তু রাসের সময় কৃষ্ণের বয়স ছিলো মাত্র ৭ বা ৮ বছর, এই বয়সী একটি শিশু কিভাবে যুবতী নারীদের সাথে যৌনক্রিয়া করতে পারে, বা তার মাথায় এই ধরণের চিন্তা আসতে পারে ? 

তাই বিভিন্ন গ্রন্থে শ্রীকৃষ্ণের জীবনে যেসব যৌনক্রিয়া বা লাম্পট্যের ঘটনা আছে, সেগুলো যে সত্য নয়, এটা খুব সহজেই অনুমান করা যায়। এসবই সনাতনধর্ম ও কৃষ্ণ বিরোধী ই#স#লা#মি#ক শাসনকালে এক মিথ্যা প্রচারণার কাহিনী। 

রাধার অস্তিত্ব বা কৃষ্ণের জীবনে  প্রমাণ করবার জন্যে যেসব রেফারেন্স গুলো সব থেকে ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর মধ্যে একটি হলো- নারায়ণ গীতি স্তোত্রের ১০ নং শ্লোক, সেখানে বলা হয়েছে :-

"রাধাধর মধু রসিকা রজনী-কর-কূল-তিলকাঃ।
নারায়ণ নারায়ণ জয় গোবিন্দ হরে।
নারায়ণ নারায়ণ জয় গোপাল হরে।"

এটা কোনো সংস্কৃত শ্লোক নয়, এটি সম্পূর্ণ বাংলা শ্লোক, যা বৈষ্ণবদের দ্বারা রচিত। 

যে বৈষ্ণবদের কোনো কথাকে বিশ্বাস করা যায় না, এরা সনাতন ধর্মের সমস্ত সিস্টেমকে ধ্বংস করেছে, আজও করে চলেছে........।

বিশেষজ্ঞদের মতে "ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ" কোনো ভাবেই ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের আগের রচিত নয়।

রাধা-কৃষ্ণের প্রেম সম্পর্কে যা বলা হয়, তা যে 100% পার্সেন্ট মিথ্যা, তার প্রমান স্বরূপ আর একটি মাত্র "ক্লু" দিই। প্রচলিত মত অনুসারে, রাধার সাথে শ্রীকৃষ্ণ প্রেম করেছে যৌবনকালে এবং তা বৃন্দাবনে। কিন্তু হরিবংশ ও মহাভারত থেকে জানা যাচ্ছে যে, ১০ বছর ২ মাস বয়সে শ্রীকৃষ্ণ, কংসকে হত্যা করে ধর্ম রাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য বৃন্দাবন ছেড়ে মথুরায় যান এবং আরো পরবর্তী কালে দ্বারকায় এবং তারপর শ্রীকৃষ্ণের কোনদিনই বৃন্দাবনে ফিরে যান নি, তাহলে যুবক শ্রীকৃষ্ণের সাথে যুবতী রাধা প্রেম হলো কখন এবং কোথায়........??? 

চৈতন্যপন্থীরা তো বরাবরই মূর্খ, এরা প্রকৃত সত্যকে ধরতে পারে না, আর প্রকৃত সত্যকে বোঝেও না। এজন্যই তো এরা 'হরিবাসর' বা 'হরিসভার' নামে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম সম্পর্কিত লীলাকীর্তনের প্রচার করে হিন্দুসমাজটাকে রসাতলে নিয়ে গেছে এবং যাচ্ছেও..........। এদের হাতে রচিত গ্রন্থ দ্বারা আমার এবং আপনার মতো সাধারণ সনাতনী হিন্দুরা 
শ্রীকৃষ্ণের জীবনে রাধার অস্তিত্বকে প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছি বা অনান্যরাও  করে চলেছেন। 
এই ৮০০ বছরের ই#স#লা#মি#ক চক্রান্তের প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা কি আদৌ আছে আর যদি থাকেও তাহলে সেটি যে কতটুকু নিরপেক্ষ, সেটা কি আমরা কখনো বিশ্লেষণ  করে দেখেছি........????

শ্রীকৃষ্ণের মতো একজন দুর্ধর্ষ পলিটিশিয়ান এবং যোদ্ধা যাকে ঘিরে তৎকালীন ভারতবর্ষের সমস্ত রাজনীতি আবর্তিত হতো। যিনি কিনা মহাভারতের যুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ নেতৃত্ব দান করেছিলেন কোনো প্রকার অস্ত্র ধারন না করেই শুধু মাত্র অর্জুনের রথের সারথি হয়ে। যার তীক্ষ্ম বুদ্ধির সামনে বিশাল কৌরব বাহিনী এবং পিতামহ ভীষ্ম, দ্রৌনাচার্য, কৃপাচার্য, অশ্বথমা, কর্ন, শকুনি এবং বহুবিধ তৎকালীন ভারত বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বগন খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল। এহেন একজন বিশ্ব মানের রাষ্ট্র নেতা, তিনি বৃন্দাবনে বাঁশি হাতে শুধু মাত্র রাধার সঙ্গেই নয় ১৮ হাজার গোপীনেদের সাথে প্রেমলীলাতে মগ্ন, এমন এক প্রেমিক পুরুষটি হটাৎ করে এক দুর্ধর্ষ যোদ্ধা এবং বিশাল এক পলিটিশিয়ানে রূপান্তরিত হয়ে যায়, এমনটি হয় কখনো......??? 

মথুরার অত্যাচারী শাসক কংস কে হত্যা করে মথুরার রাজ সিংহাসনে সুশাসক হয়ে শ্রীকৃষ্ণ বসেছিলেন এবং কংসের শ্বশুর জরাসন্ধ কে বার বার যুদ্ধে পরাজিত করেছেন আবার অন্যদিকে পান্ডব ও কৌরবদের রাজনৈতিক সংকটে একজন মিডিয়েটর হয়ে ক্রমাগত সমস্যাটা মেটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন ও পরিশেষে ১৮ দিনে বিশাল যুদ্ধে তীব্র বাস্তব বুদ্ধির দ্বারা পান্ডবদের জিতিয়ে নিয়ে বেরিয়ে আসছেন এমন দুটি ১৮০ ডিগ্রি সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী চরিত্র কোনো ভাবেই তৎকালীন ভারতবর্ষের এমন একজন জনপ্রিয় রাষ্ট্র নায়ক হয় উঠতে পারেন না.......। 
যাঁকে তাঁর অতুলনীয় নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা, যুদ্ধ নীতি এবং  সুশাসক হবার কারনে ভারতের  জনগন পরবর্তী কালে তাঁকে জীবন্ত ঈশ্বর বানিয়ে দিচ্ছে।
এই ৫ হাজার বছরে ভারতীয় জনগোষ্ঠী প্রায় ভুলেই গেছে তাঁরও আপনার আমার মতো জন্মগ্রহণ এর একটি তারিখ আছে যা আমি আগেই বলেছি এবং আবারও 
বলছি :- জন্ম তারিখ: 18ই জুলাই, 3,228 খ্রিস্টপূর্বাব্দ
মাস :- শ্রাবণ মাস, 
দিন :- অষ্টমী তিথি,
নক্ষত্র :- রোহিণী নক্ষত্রে জন্ম,
দিন :- বুধবার,
সময় :- 00:00 A.M.(রাত বারোটা)
শ্রী কৃষ্ণ 125 বছর, 08(৮) মাস এবং 07 দিন বেঁচে ছিলেন।

মহাপ্রয়ান এর তারিখ :- 
18ই ফেব্রুয়ারি 3102 খ্রিস্টপূর্বাব্দ।

কৃষ্ণের জীবনে রাধা যদি এত গুরুত্বপূর্ণ ছিলো বা গুরুত্বপূর্ণ হতো এবং রাধাকে পূজা না করলে যদি শ্রীকৃষ্ণের পূজার অধিকার না থাকতো, তাহলে কি শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে গীতায় এই উপদেশগুলো অবশ্যই  দিতেন না..........??? 

আর রাধার পূজা ব্যতীত শ্রীকৃষ্ণের পূজা ফলবান না হলে শ্রীকৃষ্ণ পরমেশ্বর নয়, রাধাই পরমেশ্বরী হয়; কিন্তু রাধার পরমেশ্বর হওয়ার পেছনে সনাতন ধর্মের প্রামান্য কোনো গ্রন্থে কি তার কোনো রেফারেন্স আছে........??? 

না, নেই....................। 

শুধু ভাগবতের এই শ্লোকটি নয়, সনাতন ধর্মীয় যেসব গ্রন্থে শ্রীকৃষ্ণের পাশে রাধার অস্তিত্বকে প্রমাণ করার অপচেষ্টা করা হয়েছে, সেসবই যে চৈতন্যপন্থী বৈষ্ণবদের কারসাজি।

না বুঝে পুরাণকে যেহেতু আমরা হিন্দুরা- বেদ, গীতার পরেই স্থান দিয়ে এসেছি, সেহেতু পুরাণে উল্লিখিত এই সব ঘটনাকে অস্বীকার করার ক্ষমতা আমাদের হিন্দুদের ছিলো না, আর পুরাণের বিরুদ্ধে কথা বলার মতো জ্ঞানী লোকও খুব কমই ছিলো, তাই এই ঘটনাগুলো ডালপালা মেলে "কৃষ্ণ চরিত্রকে" হাজার হাজার বছর ধরে কলুষিত করেছে এবং হিন্দু সমাজের ধ্বংসের কারণ হয়েছে।

মূল আলোচনার শেষে ভাগবত পুরাণ সম্পর্কে কিছু বলা দরকার, তাহলে বুঝতে পারবেন যে ভাগবত পুরাণ কী জিনিস, আর এই ভাগবত পুরাণের উদ্দেশ্যটা কী ?

বাংলায় দুই ধরণের ভাগবত পুরাণ পাওয়া যায়, একটা হলো সুবোধচন্দ্রের ভাগবত, অন্যটা বেনী মাধব শীলের ভাগবত। দুই ভাগবতের কাহিনী মোটামুটি একই। কিন্তু সুবোধ চন্দ্রের ভাগবতে অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। মাঝে মাঝে এমন অশ্লীল যে, তা কাউকে পড়ে শোনানো যায় না এবং নিজে পড়লেও সেক্স স্টোরি পড়ার ফিলিংস পাওয়া যায়।

সুবোধ চন্দ্রের ভাগবতে কৃষ্ণের রাসলীলা একটা সেক্স পার্টি, যেখানে নয় লক্ষ পুরুষ এবং নয় লক্ষ নারী নগ্ন হয়ে একত্রে কামলীলায় মেতে উঠে। এর মধ্যে    
শ্রীকৃষ্ণও আছেন। 

আমি ভেবে অবাক হই যে, শত শত নয়, হাজার হাজার বছর ধরে হিন্দুরা এসব গো গ্রাসে গিলে আসছে, আর কেউ এর প্রতিবাদ করে বলে নি যে, না, শ্রীকৃষ্ণের চরিত্র এমন হতেই পারে না; এমন কি কেউ এমন প্রশ্নও তুলে নি যে, ৭/৮ বছর বয়সী একজন বালকের পক্ষে এই রকম যৌন সম্পর্কিত ব্যাপারে জড়ানো কিভাবে সম্ভব ? এর বিপরীতে সবাই সরল বিশ্বাসে ভাগবত পুরাণের কাহিনীকে বিশ্বাস করে এসেছে এবং হিন্দু সমাজকে দিনের পর দিন রসাতলে নিয়ে গেছে।

এমন ভাগবতকে আমরা হিন্দুরা ধর্ম পুস্তক জ্ঞান করে পূজা করে আসছি, হিন্দু ধর্ম ও সমাজের পতন কি আর এমনি এমনি ?

যা হোক, কৃষ্ণের ষোল হাজার একশ স্ত্রীর কাহিনী এই সব ভাগবতের মাধ্যমেই লোক সমাজে প্রচারিত, যে ভাগবতের উদ্দেশ্য হলো "কৃষ্ণ চরিত্রকে" মহান করে তোলা নয়, তাকে ছোট করা; আর যারা ভাগবতকে ধর্ম পুস্তক মনে করে তাদের পক্ষে এসব ঘটনাকে অস্বীকার করার কোনো উপায়ও থাকে না। কিন্তু হিন্দু ধর্ম বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়ে, কৃষ্ণের তথাকথিত সেই ষোল হাজার একশ স্ত্রীর ঘটনাকে গ্রহনযোগ্য করে তোলার জন্য আমরা নানারকম ব্যাখ্যা হাজির করার চেষ্টা করে যুক্তি দিই। কিন্তু প্রকৃত সত্য জানলে এই ধরণের কোনো যুক্তি দেবার প্রয়োজন ই পড়বে না, সেই সত্যই আজ তুলে ধরলাম আজ আপনাদের সম্মুখে।

শ্রীকৃষ্ণের জীবনে যে এই ধরণের কোনো ঘটনা, কখনোই ঘটে নি, তার আরেকটা প্রমাণ হলো- মহাভারতে এই ঘটনার কোনো উল্লেখ নেই, যেমন উল্লেখ নেই রাধার। যদি কৃষ্ণ এই ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতো, ☆●তাহলে যুধিষ্ঠিরের রাজসূয় যজ্ঞের সময়, সেখানে উপস্থিত শিশুপাল, যে ছিলো কৃষ্ণের প্রধান শত্রু ও সমালোচক, সে কৃষ্ণ নিন্দার সময় এই ষোলহাজার একশ মেয়ের ঘটনার কথা অবশ্যই উল্লেখ করতো, কিন্তু শিশুপালও তা উল্লেখ করে নি, যেমন শিশুপাল উল্লেখ করে নি রাধার কথাও। কারণ, কৃষ্ণের জীবনে রাধা বলে যেমন কেউ ছিলোই না, তেমনি তার জীবনে ষোল হাজার একশ মেয়েকে উদ্ধার ও বিয়ে করার ঘটনাও ঘটে নি।●☆

☆শ্রীকৃষ্ণের জীবনচরিতে রুক্মিনী ভিন্ন অন্য কোনো পত্নীর কার্যক্রম দেখা যায় 
না।☆
☆প্রদুম্ন ছাড়া অন্য কোনো পুত্রের নাম বা তার কাজের কোনো কিছুর উল্লেখ শুধু মহাভারতেই নয়, অন্য কোনো পুরাণেও উল্লেখ নেই কেনো......???☆
☆প্রদুম্নের মা রুক্মিনীই ছিলো কৃষ্ণের একমাত্র স্ত্রী।☆

তাই, আবারও নিবেদন জানাচ্ছি,  একজন সত্যিকারের হিন্দুত্ববাদী হিসাবে, 
এখন থেকে এই  দুর্ধর্ষ বীর এবং বিশাল রাজনীতিবিদ যুগপুরুষ এই শ্রীকৃষ্ণের পূজা করুন.............
এবং অনান্যদের করতেও উৎসাহিত করুন..........। 
যা তিনি নন, যা তিনি কোনোদিনই ছিলেন না, তার সেই "রাধার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবৈধ ছবিকে" পূজা করার করার মানে একজন প্রকৃত হিন্দু হয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে অপমান করা..............।
Please, এত বড় একজন মহামানব কে রাধার ছবির পাশে দাঁড় করিয়ে, হাতে বাঁশি ধরিয়ে দিয়ে, পায়ে নূপুর পরিয়ে দিয়ে একজন "ব্যভিচারি পুরুষ" রূপে আর পূজা করবেন না............। 
সকলকে বোঝান এবং এটিকে এক জন-আন্দোলনের রূপ দিন...........

Tuesday, September 19, 2023

একম সনাতন ভারত - আমাদের সপ্ত সংকল্প

                                                            ।।     জয় শ্রী কৃষ্ণ     ।।

নমস্কার বন্ধুরা, পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম নিয়ে শুরু করলাম আমাদের পথ চলা ।

আমরা একম সনাতন ভারত দল । সনাতনী হিন্দুদের জন্য একমাত্র রাজনৈতিক বিকল্প ।




আমরা এখানে সংক্ষিপ্ত রূপে আমাদের ব্যাপারে আপনাদের অবহিত করার চেষ্টা করছি । আমরা আলোচনা করবো যে কেন আমাদের আত্মপ্রকাশ করতে হল ? আমাদের লক্ষ কি ? এবং সনাতনী হিন্দু সমাজের জন্য আমাদের সপ্ত সংকল্পের ব্যাপারে । আশা করি আপনাদের আশীর্বাদ ও ভালোবাসা পাবো।


যেমনটা আগেই বলেছি , আমরা হলাম রাজনৈতিক দল । তবে অন্যদের থেকে আমাদের পার্থক্য তা হল , আমরা  সনাতনা হিন্দু সমাজের জন্য নিবেদিত ও উৎসর্গীকৃত একটি রাজনৈতিক দল । আমরা গোটা ভূভারতেও এমন কোনো দল আর পাবো না যেটা সনাতনী হিন্দুদের জন্য নিবেদিত । এমনকি আপনাদের তথাকথিত ও প্রচলিত মেকি ও ছদ্মহিন্দুবাদী দল গুলিও এর ব্যতিক্রম ।


আমরা পথ চলা শুরু করেছিলাম একজুট জম্মু নামের সাথে । ন্যায়িক অধিবক্তা শ্রী অঙ্কুর শর্মার হাত দিয়ে শুরু হয়েছিল আমাদের পথ চলা । তারপর অনেক লড়াই ও চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আমরা এখন একম সনাতন ভারত রূপে আত্মপ্রকাশ করেছি । আমরা সাথে পেয়েছে পত্রকার শ্রী সন্দীপ দেও জী কে । এছাড়াও আরো অনেক গণ্যমান্য , সনাতন নিবেদিত জনেদের আমরা সাথে পেয়েছি ।



সনাতনী হিন্দু সমাজ সর্বদাই ভারতের সরকারগুলির থেকে , ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির থেকে সৎ ছেলের মতো ব্যবহার পেয়ে এসেছে । তা সে সামাজিক ক্ষেত্রেই হোক বা রাজনৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক । সনাতনী হিন্দু সমাজ বরাবরই বঞ্চনা,অত্যাচার,উৎপীড়ণ ,গণহত্যা,গণপলায়নের শিকার হয়ে এসেছে ।কিন্তু এখন আর নয় । আমরা সনাতন ভিত্তিক রাজনীতি করতে এসেছি । আমাদের আশু লক্ষ্য হলো ভারতে সনাতনী সমাজের উৎকর্ষতা প্রদান করা । আর আমরা  সনাতনী হিন্দু সমাজের জন্য আমাদের সপ্ত সংকল্প নিয়ে এসেছি । এখন তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি ।


প্রথম সংকল্প : একম্ সনাতন্ ভারত্ দলের সর্বপ্রধান অঙ্গীকার হলো ভারতীয় সংবিধানের পরিপূর্ণ সংশোধন এবং গণতান্ত্রিক হিন্দু রাষ্ট্রের সূচনা। এর সাথে সাথে সাংবিধানিক ভাবে দেশের সনাতন সংখ্যা গরিষ্ঠদের প্রথম শ্রেণীর নাগরিকত্ব প্রদান। হিন্দু গণহত্যা এবং ভারতবর্ষের প্রতিটি রাজ্যে এলাকা ভিত্তিক জনসংখ্যাগত পরিবর্তন করে হিন্দুদের ক্রমাগত দুর্বল করার অপপ্রয়াস কে পরিপূর্ণ প্রতিরোধ। (ল্যান্ড জিহাদ এবং অন্যান্য উপায়ে যা প্রতিনিয়ত সংগঠিত হয়ে চলেছে) এই জাতীয় জঘন্য চক্রান্ত ও অপপ্রয়াস কে একটি উপযুক্ত আইনের মাধ্যমে দেশদ্রোহীতা মূলক অপরাধ হিসাবে ঘোষণা করা এবং যা শাস্তি যোগ্য মৃত্যুদণ্ড মূলক অপরাধ রূপে পরিগণিত হবে।


দ্বিতীয় সংকল্প : রাষ্ট্রসেঙ্ঘর নিয়ম অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার 5% এর কম একটি ধর্মীয়/ভাষাগত জনগোষ্ঠী গুলিকেই একমাত্র "সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে" রূপে মান্যতা প্রদান করবার জন্য সংবিধান সংশোধন করা। ভারতবর্ষে কে বিশ্ব-সনাতনীদের জন্য "প্রাকৃতিক হোমল্যান্ড" হিসাবে ঘোষণা করা এবং তাদের জন্য পূর্ণ নাগরিকত্বের অধিকার কে বলবৎ করা।


তৃতীয় সংকল্প : মন্দিরে ঈশ্বরের কর্তৃত্বই সর্বোচ্চ - এটির পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। হিন্দু মন্দির/মঠের উপর থেকে রাজ্য/সরকারি নিয়ন্ত্রণ শেষ করা। কাশ্মীরের প্রাচীন সূর্য মন্দির "মার্তান্ড মন্দির" এর অবিলম্বে পুনর্গঠন এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠা; মথুরায় "শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি" এবং কাশীতে (বারানসী) জ্ঞানব্যাপী তীর্থক্ষেত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা।


চতুর্থ সংকল্প : সমগ্র হিমালয়ে অবস্থিত  রাজ্য গুলির সনাতনী পরিচয় এবং জন বিন্যাস অক্ষুন্ন রাখা। কাশ্মীর থেকে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু প্রদেশকে আলাদা করা। কাশ্মীরকে 2টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা এবং একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন রাজ্য হিসাবে জম্মু প্রদেশের প্রতিষ্ঠা এবং গঠন।



পঞ্চম সংকল্প : গোহত্যার উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা। এবং পবিত্র গাভী মাতা, মা গঙ্গা এবং শ্রী রাম সেতুকে জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতীক হিসাবে ঘোষণা করা এবং সংবিধানের প্রস্তাবনায় ১৯৭৬ সালে কালা "এমারজেন্সি পিরিয়ড" এর সুযোগ নিয়ে, তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক সমগ্র বিরোধী পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি নেতাকে জেলে বন্দি করে রেখে, পার্লামেন্ট কে স্তব্ধ করে দিয়ে, সম্পূর্ণ অবৈধভাবে যুক্ত করা "ধর্মনিরপেক্ষতা" ও "সমাজতন্ত্র" শব্দ দুটিকে ভারতবর্ষের সংবিধান মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এই দুটি শব্দ কে ভারতীয় সংবিধান থেকে সরিয়ে দিয়ে "রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠার" আদর্শ কে অবলম্বন করে, "গণতান্ত্রিক হিন্দু রাষ্ট্রে"র স্থাপনা করা।


ষষ্ঠ সংকল্প : অবিলম্বে ওয়াকফ আইন, উপাসনার স্থান আইন 1991 এবং সাচ্চার কমিটির সুপারিশগুলির অবিলম্বে বাতিল এবং সমাপ্তি। ভারতের সংবিধানের 30 নং অনুচ্ছেদের  সংশোধন করে হিন্দুদের তাদের গুরুকুল শিক্ষা ব্যবস্থা ও স্বায়ত্তশাসিতভাবে তা পরিচালনা করবার পূর্ণ অধিকার প্রদান করা। ভারতবর্ষের সংবিধানে বিরাজমান, সনাতন সংস্কৃতি ও সভ্যতার ক্ষতি করে এমন নিবন্ধ, আইন ও ধারা গুলির পর্যালোচনা করে সেই গুলির নিরস্ত্রীকরণ করা। "লাভ জিহাদ" ও "ধর্মান্তরকরণ" কে সম্পূর্ণ রূপে কঠিন দণ্ডনীয় অপরাধ রূপে গণ্য করে, পরিপূর্ণ নিষেধাজ্ঞাকে কার্যকর করা।


সপ্তম সংকল্প : শুধু উন্নয়ন নয়, সত্য এবং বাস্তবিক ইতিহাসের সুদৃঢ় 6 টি বলিষ্ঠ স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে সামগ্রিক উন্নয়ন। স্থানীয় ভাষা, ইতিহাস, সংস্কৃতি, স্থানীয় জীবনচর্যা, আধ্যাত্মিকতা এবং পরিবেশ সম্পর্কিত সচেতনতা নিয়ে পরিপূর্ণ বিকাশ! ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঐতিহ্যগত কাঠামোকে বজায় রাখা এবং সেনা ও পুলিশকে ক্ষমতায়ন ও আধুনিকীকরণের সময় সৈনিক, প্রাক্তন সৈনিক এবং তাদের পরিবারকে যথাযথ সম্মান দেওয়া।


এখন আপনারা নিশ্চই বুঝতে পেরেছেন যে আমাদের কি উদ্যেশ্য ? আপনাদের সেবায় এসে গিয়েছে একম সনাতন ভারত । আমরা সনাতন হিন্দু ধর্ম , সনাতন সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধ । তাই দোলে দোলে একম সনাতন ভারতের সাথে যোগ দিন ।

একমের সাথে , সত্য সনাতন ভারতের পথে ।


সনাতন্ হিন্দু ধর্মে পবিত্র সংখ্যা ১০৮ এত মহাত্মপূর্ণ কেন...???

সনাতন্ বৈদিক হিন্দু ধর্মে, ১০৮ সংখ্যা টি অত্যন্ত পবিত্র সংখ্যা রূপে গণ্য করা হয়। কিন্তু কেন...??? কলমে :- অরিন্দম রায়। আমাদের যো...