Thursday, October 19, 2023

ভারতীয় রাজনীতির হিন্দুঘাতী, শরীয়াপন্থী চরিত্র

লিখন: বিজিৎ প্রশান্থা

হিন্দুদের এবং হিন্দুত্বের বেশ কয়েকটি ডক্ট্রিন আছে যেগুলি খুব সহজেই হিন্দুদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায়। হাজার বছর ধরে আব্রাহামিক মজহবগুলি কেবল ভারতের সম্পদ লুঠ করেই ক্ষান্ত হয়নি, ঘুণপোকার মতো ধীরে ধীরে ভারতীয় ভাবাদর্শ, নান্দনিকতা, অধ্যাত্মবোধকে বিকৃত এবং কলুষিত করে ভারতীয় সমাজবোধের ধারণাকে subvert করেছে।

সেই খিলজির সময় থেকেই হিন্দুত্বের গায়ে ছিল গেরুয়া - যা আসলে হিন্দুত্বের শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রাঙ্গনে সর্বস্ব ত্যাগ করে মৃত্যু পর্যন্তু ভীষণ লড়াই-এর প্রতীকী। তবে এর সাথে সাথে হিন্দু সমাজে বরাবরই ছিল বাৎসল্যবোধ এবং অতিথি সৎকারের আন্তরিকতা। যখন থেকে মধ্যযুগীয় হিন্দু সমাজ এই সংস্কারবশেই মরুভূমির কিছু গণহত্যাকারী ডক্ট্রিনকে অধ্যাত্মবোধ ভেবে ভারতের বুকেই জায়গা দিতে শুরু করেছিল এবং ঊনবিংশ ও দ্বাদশ শতাব্দীতে শাসকের জায়গা ছেড়ে দিতেও কুন্ঠাবোধ করেনি, তখন থেকেই ভারতীয় সমাজে হাইব্রিড, সাময়িকতা-বাদী, ছিঁচকে সমাজবোধের উদ্ভব হয়। এই অগভীর সমাজচেতনা আর Macaulay-প্রবর্তিত ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থা ভারতের শ্রেষ্ঠ মনীষাদের মানস হরণ করে সমাজের উঁচুতলার মানুষদের ব্রিটিশদের কেরানি এবং গোলাম বানিয়ে দেয়, এবং কালক্রমে ব্রিটিশদেরই মদতপুষ্ট একটি আপোসবাদী রাজনৈতিক সংগঠনের জন্ম দেয়, যার নাম ছিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, এবং যার সদস্য হওয়ার অলিখিত শর্ত ছিল ক্লীবতা এবং আত্মসমর্পণ।

সিপাহী বিদ্রোহের পর থেকেই ব্রিটিশরা এটাও উপলব্ধি করতে শুরু করে যে ভারতের মুসলিম সমাজ আসলে যেকোনো শাসনতন্ত্রের পক্ষেই নুইসেন্স এলিমেন্ট। এদের শিক্ষা-দীক্ষা, আইন-কানুন, চিকিৎসা-সেবা-দাঙ্গা-ফ্যাসাদ সব কিছুই কুরআন এবং হাদিসে বর্ণিত মধ্যযুগীয় বর্বর ইসলামিক ডক্ট্রিনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বস্তুত ভারতের কনভার্টেড মুসলিম সমাজ, যাদের কিনা পাসমান্দা বলা হয়, আসলে আরবি আশরাফদের narrative-এর অধীনে কয়েক শতক ধরে বিনা প্রশ্নে দাসত্ব করে আসছে।

আঠারো শতক পর্যন্ত সকল গুরুত্বপূর্ণ দফতরে আশরাফ ও কিছু স্থানীয় মুসলমানদের একচেটিয়া আধিপত্য ছিল, যা মুঘলদের পতনের পর এক শতাব্দীর মধ্যে ক্রমশ কমে যায়। আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর দেড় শতাব্দীর মধ্যেই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ অংশ দখল করে নেয়। সেই সাম্রাজ্যে, থেকে 1871 সালের এপ্রিল মাসে বাংলায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পৃষ্ঠপোষকতা বিতরণের তথ্য [১], এটি পাওয়া যায় যে ব্রিটিশ আমলের বিভিন্ন অফিসে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলিতে অনুপাতের হিসেবে হিন্দুদের থেকে মুসলিম যারপরনাই কম ছিল। সব মিলিয়ে এই অনুপাত ছিল ৭:১। ১৮৬৯-এ Law অফিসার ছিলেন ৬ জন, যাঁর মধ্যে ৪ জন ইংলিশ, ২ জন হিন্দু, এবং শূন্য মুসলিম; হাইকোর্ট-এর অফিসারদের মধ্যে ৭ জন হিন্দু এবং শূন্য মুসলমান; ব্যারিস্টারদের মধ্যে তিনজন হিন্দু এবং শূন্য মুসলমান; অ্যাটর্নি, প্রক্টর, এবং সলিসিটরদের মধ্যে ২৭ জন হিন্দু এবং শূন্য মুসলিম; মেডিসিন গ্রাডুয়েটদের মধ্যে ১০ জন হিন্দু, ১ জন ইংলিশ, এবং শূন্য মুসলিম; মেডিসিন লাইসেনসিএট-দের মধ্যে ৯৮ জন হিন্দু, ৫ জন ইংলিশ, এবং ১ জন মুসলিম। তদানীন্তন ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিস অফিসার W W Hunter এপ্রসঙ্গে মন্তব্য করেন,

“The Musalmans of Bengal do not want intelligence, and the spur of poverty constantly goads them to do something to better their condition. The Government has covered Bengal with schools, and many of its Districts are peopled with Muhammadans; yet the Government schools fail to develop a class of Musalmans who can compete successfully at the University, or find an entrance into any of the professions. The same schools send forth every year a vast body of well-read, ambitious, and intellectual Hindu youths, who distinguish themselves as young men at the university, and in after-life monopolize every avenue to wealth or distinction.

The truth is that our system of public instruction, which has awakened the Hindus from the sleep of centuries and quickened their inert masses with some of the noble impulses of a nation, is opposed to the traditions, unsuited to the requirements, and hateful to the religion of the Musalmans.”

এই বিস্তর ফারাক সত্ত্বেও আশরাফরা ভারতবর্ষে মুসলিম শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকীকরণের জন্য সবল তোলেনি। বরং 'দূরবীন' জাতীয় কিছু সংবাদপত্র এই বলে প্রচার করতে শুরু করে যে, হিন্দু এবং ব্রিটিশরা অবৈধভাবে মুসলিমদের চাকরি ছিনিয়ে নিচ্ছে। ব্রিটিশরাও হিন্দুদের ব্যাপারে কয়েকটি বিষয় বুঝতে শুরু করে:

১। হিন্দুদের রাজনৈতিক ঐক্য নেই।
২। হিন্দুরা রাজনৈতিক দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে হিন্দুরা সাহসী এবং বিচক্ষণ নয়।
৩। দেশ কীভাবে চালাতে হয় সেব্যাপারে হিন্দুদের কোনো ব্যবহারিক জ্ঞান নেই।

এসব দেখে ব্রিটিশরা উপলব্ধি করতে শুরু করে যে, মুসলিম সম্প্রদায়ের তুষ্টিকরণ করে মুসলিমদের বাগে আনতে পারলে ওদের ব্যবহার করেই সংখ্যাগুরু হিন্দু সমাজকে নির্বিঘ্নে শাসন করা যাবে। সেই কারণেই মেধাভিত্তিক একটা ব্যবস্থা প্রবর্তন করার বদলে ব্রিটিশরা এই তথাকথিত সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে কোনোরকম বৈষম্যবাদের পরোয়া না করেই চাকরি দিতে শুরু করে। W.W. Hunter মন্তব্য করেন,

“Is it that the Hindus have all along been better men than the Musalmans, and only required a fair field in order to outstrip them in the race? Or is it that the Musalmans have so many careers open to them in non-official life, that they are indifferent to Government employment, and leave the Hindus to walk over the course? The Hindu has unquestionably a high order of intellect; but an universal and immeasurable superiority on the part of the Hindus, such as would be required to explain their monopoly of official preferment, is unknown at the present day, and is in direct contradiction to their past history. The truth is that when the country passed under our rule, the Musalmans were the superior race, and superior not only in stoutness of heart and strength of arm, but in power of political organization, and in the science of practical government.”

আরবি আশরাফ সমাজ যে দেশজ পাসমান্দা মুসলিমদের 'mind control' করার ক্ষমতা রাখে, এই বাস্তবতা অনুধাবন করেই ব্রিটিশ আশরাফ-ইংলিশ নেক্সাস বানাতে তৎপর হয়। এজন্য প্রথমে তারা মক্কার তিনটি বিখ্যাত সম্প্রদায়ের নেতাদের কাছ থেকে একটি বিচিত্র ফতোয়া জোগাড় করে আনে যে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য আসলে 'দেয়ার-উল-হারাব' (যুদ্ধের দেশ, যেখানে কাফিররা ক্ষমতাসীন) নয়। সেজন্য ভারতীয় মুসলিমদের জন্যে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ওয়াজিব (কর্তব্য) নয়। এই একটি পদক্ষেপ ভারতে জিহাদের হাওয়া ব্রিটিশদের বদলে হিন্দুদের বিপক্ষে ঘুরিয়ে দেয়। ভারতের পাসমান্দা মুসলিমরা যখন ইসলামিক দিকনির্দেশের জন্য আশরাফ-মোল্লা-মাওলানা সমাজের মুখাপেক্ষী হয়, তখন আশরাফ-মোল্লা-মাওলানারা পাসমান্দাদের ম্যানিপুলেট করার উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক লক্ষ্য অনুযায়ী ইচ্ছেমতো ইসলামিক গ্রন্থের ব্যাখ্যা এবং নতুন ইসলামিক হাদিস গড়তে শুরু করে। এই ব্যাপারটি W.W. Hunter -এর নজর এড়িয়ে যায়নি [১]:

"The danger to British rule comes from the ‘fanatic masses’, who take their religion seriously unlike the ‘well-to- do Musalmans’ who contrive to evade the clear prescriptions of the Quran to flee or to rebel."

এদিকে ব্রিটিশদের পোষ্য সংগঠন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস,- যার মূলমন্ত্র ছিল ক্লীবতা এবং আত্মসমর্পণ, কালক্রমে জন্ম দেয় মহাত্মা গান্ধী নামক এক পৌরুষহীন নেতার, যে নির্দ্বিধায় ঘোষণা করে [২]:

"মুসলমানরা যদি হিন্দুদের হত্যা করতে উদ্যত হয় তবুও হিন্দুদের মুসলমানদের বিষয়ে বিরূপ মনোভাব পোষণ করা উচিত নয়। মুসলমানরা যদি আমাদের হত্যাও করতে চায়, তাহলে আমাদের সাহসের সাথে মৃত্যুকে বরণ করা উচিত। হিন্দুদের হত্যা করে মুসলমানরা যদি তাদের সাম্রাজ্য স্থাপন করে, তাহলে আত্মদানদের মাধ্যমে আমরা নতুন যুগের সূচনা করব।"

এই চরম আত্মঘাতী শরিয়া-আপোষী রাজনীতিই মোহনদাস গান্ধী তথা ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল। এই অবান্তর মুসলিমপ্রেম এবং শারিয়াপ্রেমের বশে মোহনদাস গান্ধী কংগ্রেসের অসহযোগ আন্দোলনকে মুসলিমদের সেই খিলাফত আন্দোলনের সাথে জুড়ে দেয়, যে খিলাফত আন্দোলন ভারতের বুকে খলিফাতন্ত্র অর্থাৎ মুসলিম শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মৌলবাদী উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, কেরালার মালাবারে যখন মোপলাহ মুসলমানরা স্রেফ খলিফাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হাজার হাজার হিন্দুর গণহত্যা করছিলো, তখন গান্ধী হিন্দু গণহত্যাকে এই বলে জাস্টিফাই করে যে [৩],

"মোপলাহ সমাজের এই ধর্মান্ধতার কারণ আমাদের খোঁজা উচিত। হিন্দুরা নিশ্চয়ই মোপলাহ মুসলিমদের সাথে বন্ধু বা প্রতিবেশীর মতো ব্যবহার করেনি। এখন আর মোপলাহদের ওপর অভিমান করে কোনো লাভ নেই।"

মোপলাহ হিন্দু গণহত্যার অন্যতম নায়ক মাওলানা হাসরাত মোহানি সম্পর্কে গান্ধী বলেন,

"Everything is fair in love and war with the Maulana. He has made up his mind that the Moplahs have fought for their religion. And that fact (in his estimation) practically absolves the Moplahs from all blame.....I advise my Malabar friends not to mind the Maulana. Despite his amazingly crude views about religion, there is no greater nationalist nor a greater lover of Hindu-Muslim unity than the Maulana. His heart is sound and superior to his intellect, which, in my humble opinion, has suffered aberration."

কোরান এবং হাদিসে বর্ণিত ইসলামের পয়গম্বর হাজরাত মোহাম্মদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যখন মহাশয় রাজপাল 'রঙ্গীলা রসুল' নামক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন, তখন গান্ধী 'ইয়ং ইন্ডিয়া' নামক পত্রিকায় ক্রমাগত লেখা ছেপে মুসলিম সমাজকে উত্তেজিত করতে থাকেন, যার ফলস্বরূপ কিছুদিনের মধ্যেই মহাশয় রাজপালের হত্যা হয়।

শুধু তাই নয়, ১৯০৫ থেকে ১৯৪৬ পর্যন্ত মুসলিম লীগের প্রতিটি মৌলবাদী, শরীয়াপন্থী দাবিদাওয়া কংগ্রেস কায়মনোবাক্যে মেনে নেয়, যার মধ্যে ১) ১৯০৯ সালে মুসলিমদের জন্য পৃথক ইলেক্টরেট গঠন, ২) উর্দুর মতো আশরাফি, বিচ্ছিন্নতাবাদী একটি ভাষাকে সরকারি এবং আইনি ভাষার মর্যাদা প্রদান, ৩) কংগ্রেসের বৈঠকে 'বন্দে মাতরম' স্লোগানের ওপর নিষেধজ্ঞা, ৪) হিন্দু এবং মুসলিম ভারতের জন্য পৃথক পতাকার সম্মান, ৫) সিন্ধু, বেঙ্গল, পাঞ্জাবের মতো প্রদেশকে মুসলিমদের হাতে শাসনের জন্য ছেড়ে দেওয়া, অবশেষে ৬) মুসলিম লীগের শর্ত মেনে ভারতের বিখন্ডনের মতো অজস্র পাগলাটে দাবিদাওয়া ছিল।

ভারতীয় রাজনীতির এই হিন্দুঘাতী, শরীয়াপন্থী চরিত্র কিন্তু ভারত বিভাজনের পরও এতটুকুও বদলায়নি। কংগ্রেস স্বাধীনতার পরে আরবি-আশরাফ এবং ব্রিটিশদের সহায়তায় ভারতেরই অভ্যন্তরে একটি ভাসা-ভাসা political স্টেট তৈরি করেছিল। এই শয়তানি নেক্সাস কংগ্রেসের অত্যাচারী শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করেছিল এবং ভারতের নেতা-আমলাদের সস্তা জনপ্রিয়তা এবং বৈভবশালী হতে সাহায্য করেছিল। এই কংগ্রেসই স্বাধীনতার পর থেকে মুসলিমদেরকে রাজনৈতিকভাবে একত্রিত করার এবং হিন্দুদের চিরতরে বিভক্ত করার জঘন্য কর্মসূচী শুরু করে, যাতে এই সংখ্যালঘু এলিট বাবু-সমাজ দীর্ঘ সময়ের জন্য সংখ্যাগুরু হিন্দুদের ওপর নির্বিঘ্নে ছড়ি ঘোরাতে পারে। এর জন্য কংগ্রেস, কমিউনিস্ট, এবং ইসলামিস্টরা বেশ কয়েকটি এজেন্ডা বেছে নেয়:

(i) বর্ণ ব্যবস্থাকে Caste সিস্টেম-এ পরিবর্তন করা এবং Caste identity politics প্রবর্তন,
(ii) তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানে সংখ্যালঘু অধিকার প্রবর্তন,
(iii) হিন্দু অনুভূতিকে হেয় করে এমন মিথ্যা ইতিহাস শেখানো এবং জিম্মি হিন্দু তৈরি করা, যারা নিজেদেরই হিন্দু ইতিহাস, হিন্দু ঐতিহ্য, এবং হিন্দু মূল্যবোধকে ঘৃণা করবে।

যেহেতু হিন্দু সমাজের কাছে বরাবরই সাহসী, দৃপ্ত হিন্দুত্ব ন্যারেটিভের অভাব ছিল, তাই কংগ্রেস-বিরোধী পার্টিগুলিও কংগ্রেস-কমিউনিস্টদের এই ফাঁদে পা দেয়। কালক্রমে হিন্দু সমাজের ঐক্যখণ্ডন এবং সংখ্যালঘু সমাজের একত্রীকরণের এই বিষাক্ত রেসিপি ভারতীয় রাজনীতির মূল রেসিপি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভোটের জাঁতাকলে পড়ে তথাকথিত হিন্দুবাদী দলগুলিও এই ধ্বংসাত্মক খেলায় মেতেছে। তাই তো যখন বিজেপি ওড়িশার BJD সরকারকে caste census করতে প্ররোচনা দেয়, বা মোদী আম্বেদকারবাদীদের সভায় তথাকথিত উচ্চবর্ণের মানুষদের বিরুদ্ধে 'হিসাব বরাবর করা'-র কথা বলে, বা মন্দিরের দৈব সম্পত্তি চুরি করে হজযাত্রার জন্য ভর্তুকি দেয়, বা কানহাইয়া লাল-এর গলা কেটে গেলেও ভারতের সমস্ত দল নিশ্চুপ থেকে যায়, তখন বুঝতে অসুবিধে হয় না যে ভারতের রাজনীতি,শাসনতন্ত্র এবং ন্যায়বিচারের ঝোঁক সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুর বিরুদ্ধাচারে মত্ত।

এর সাথে যোগ হয়েছে সংখ্যাগুরু হিন্দু সমাজের ট্যাক্সের টাকায় সংখ্যালঘু সমাজের মাত্রাতিরিক্ত পোষণ এবং তুষ্টিকরণ - সাথে সাথে হিন্দুদের শিক্ষা- এবং ধর্ম-সংস্থান নির্মাণ, হিন্দু ধর্ম প্রচার ও প্রসার ইত্যাদি থেকে আইনিভাবে হিন্দুদের বঞ্চিত করা। এর ফলস্বরূপ শহুরে হিন্দু, SC এবং ST হিন্দুসমাজ ধীরে ধীরে হিন্দুত্বের মূল ধারা থেকে দূরে সরে গেছে। সেজন্য এই সমাজকে ধর্মান্তরিত করা এবং হিন্দু সমাজের বিরুদ্ধাচারণে ব্যবহার করা রাষ্ট্র এবং মুল্লা-মিশনারির মতো সাম্প্রদায়িক শক্তিদের জন্য অনেক সহজ হয়ে গেছে। আর সেই ধর্মান্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় ফান্ডিং এই শক্তিগুলি সরকার থেকে ভর্তুকির নামে আদায় করে - যে ভর্তুকি কালান্তরে সরকারের কব্জা করা হিন্দু মন্দিরগুলির অবাধ লুঠ থেকে আসে।

একম সনাতন ভারতের মূল লক্ষ্য এসমস্ত স্থবিরতা এবং ষড়যন্ত্র থেকে হিন্দু সমাজকে রাজনৈতিকভাবে টেনে বের করা, যাতে হিন্দু সমাজ নিজের আত্মরক্ষা এবং আত্মসম্মানের কঠিন লড়াই মাথা উঁচু করে লড়তে পারে। আমরা একদিকে যেমন বিগত এক সহস্রাব্দ ধরে ঘটে চলা হিন্দুহত্যা এবং হত্যাকারী শক্তিগুলির ডক্ট্রিন এবং ইতিহাস সম্পর্কে হিন্দু সমাজকে ওয়াকিবহাল করে চলেছি, তেমনি জাতি-রাজ্য-ভাষা-নির্বিশেষে সমস্ত হিন্দুদের একত্রিত করে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের লড়াইতে প্রখর নেতৃত্ব দিয়ে চলেছি।

আমাদের বিশ্বাস: ভারতের বুকে নিরপেক্ষ, উদারবাদী রাজনীতি সনাতনের শাশ্বত, মানবতাবাদী আদর্শ থেকেই উৎসারিত হতে পারে। সনাতন-ই ভারতের একমাত্র ধর্ম এবং সনাতনের কল্যাণ-ই ভারতের কল্যাণ। সেই নিরীখে সনাতনী হিন্দুত্ববাদই একম সনাতন ভারতের প্রথম এবং একমাত্র মতাদর্শ।

References:

[১] W.W. Hunter, ‘The Indian Musalmans: Are They Bound in Conscience to Rebel Against the Queen?’, AD 1871
[২]Mahatma Gandhi Collected Works Vol 94 (https://www.gandhiashramsevagram.org/gandhi-literature/mahatma-gandhi-collected-works-volume-94.pdf)
[৩] B.R. Ambedkar, Pakistan or The Partition of India, p 153

No comments:

Post a Comment

সনাতন্ হিন্দু ধর্মে পবিত্র সংখ্যা ১০৮ এত মহাত্মপূর্ণ কেন...???

সনাতন্ বৈদিক হিন্দু ধর্মে, ১০৮ সংখ্যা টি অত্যন্ত পবিত্র সংখ্যা রূপে গণ্য করা হয়। কিন্তু কেন...??? কলমে :- অরিন্দম রায়। আমাদের যো...